Addiction Informations

মাদকাসক্তি কি ?  

মাদকাসক্তি সম্পর্কে ধারনা অর্জন করতে হলে আগে বুঝতে হবে আসক্ত কি ? আসক্তি একধরনের “ মনোদৈহিক অসুস্থতা ”  

আসক্তি কোন কিছু অর্জন করতে সক্ষম হলে আমাদের ভাল লাগে। প্রকৃতপক্ষে খাদ্যগ্রহণ, শরীর চর্চা, প্রজনন কিংবা বিপদ থেকে বেঁচে ফেরা; জীবজগতে টিকে থাকার জন্য যাই করুন না কেন আপনার মস্তিষ্ক আপনাকে তা করতে উৎসাহিত করবে এই “আনন্দের অনুভূতি” দিয়ে পুরস্কৃত করে। প্রায় দুই লক্ষ বছর ধরে আধুনিক মানুষের বিবর্তনে এই প্রক্রিয়া বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।কিন্ত এখন আমরা এসব  কিছু না করেই কীভাবে (যেমন ড্রাগ নিয়ে) এই পুরস্কার পাওয়া যায় তা জেনে গিয়েছি। এই অনুভুতির সহজলভ্যতা তাই এসব কাজ বারবার করার আকাঙ্ক্ষার সৃষ্টি করে,যা থেকে উৎপত্তি হয় আসক্তির।  

সহজভাবে এই রোগের সংজ্ঞাঃ   আসক্তি একপ্রকার টান , যা আমরা বারবার করি , যার উপর আমাদের অসুস্থ নির্ভরশীলতা জন্মায় এবং সর্বপরি যার উপর আমাদের কোন নিয়ন্ত্রন থাকে না .

আসক্তি প্রধানত দুই প্রকার

কার্যজনিত আসক্তি দ্রব্য জনিত আসক্তি

কার্যজনিত আসক্তিঃ কোন কাজের প্রতি ব্যাক্তির নির্ভরশীলতা যদি এরুপ অর্থ বহন করে যে, কোন নির্দিষ্ট কাজ করলে ভালোলাগে আর না করলে খারাপ লাগে এবং তার ফলাফল ব্যাক্তির জীবনে নেতীবাচক প্রভাব বিস্তার করে, এ ধরনের আসক্তিকেই কার্যজনিত আসক্তি বলা হয়। যেমনঃ- ইললিগ্যাল সেক্স, জুয়াস খেলা, গেমস খেলা, ইন্টারনেটে সময় কাটানো । এই আচারন সমূহকে কম্পালসিভ বিহেবিয়ার বা বাধ্যতামূলক আচারন বলা হয়, এবং অনেক সময় এদের বিকল্প নেশার সাথে তুলনা করা হয়।

দ্রব্য জনিত আসক্তিঃ ব্যাক্তি কোন দ্রব্যের উপর এমনভাবে শারীরিক ও মানুসিক ভাবে নির্ভরশীল হয়ে পরে নিদ্দিষ্ট দ্রব্য নির্দিষ্ট সময়ে গ্রহন না করলে ব্যাক্তি শারীরিক ও মানুসিক ভাবে কষ্টের স্বীকার হয় স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে পারে না। আবার গ্রহন করলে সে সাময়িক স্বস্থি পায় কিন্ত মনমানসিকতা ও শারীরিকভাবে প্রচন্ড ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যার প্রতিফলন তার পারিবারিক, সামাজিক, জীবনে দেখা দেয়, এধরনের আসক্তিকে দ্রব্য জনিত আসক্তি বলা হয়।  

আসক্তির সৃষ্টি হয় কিভাবে  ?

একজন ব্যাক্তি প্রথম যেদিন কোন না কোন ভাবে মাদক গ্রহন / এমন কোন কাজ করে যা তার মাঝে ভালোলাগা তৈরী করে, সেই ভালোলাগা পুনারায় পাবার জন্য সে পুনঃ পুনঃ সংশ্লিষ্ট কাজগুলো করে, একসময় না করে আর থাকতে পারে না।

নিম্মের সমীকরণ দেখলে ভালোভাবে বোঝা যাবেঃ

প্রথম শিক্ষা / অভিজ্ঞতা ভালোলাগা টান বারবার করা / বাধত্যামূলক আচারন – অসুস্থ নির্ভরশীলতা  –   নিয়ন্ত্রনহীনতা   = আসক্তি

আসক্তির প্রকৃতিঃ

আসক্তি অনিরাময়যোগ্য কিন্ত নিয়ন্ত্রনযোগ্য একটি মনোদৈহিক অসুস্থতা, এই রোগ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পায়,এই রোগের পরিনাম অকাল মৃত্যু। আসক্তির ক্ষতিঃ শারিরীক ক্ষতিঃ  ৩% থেক ৫%, মানসিক ক্ষতিঃ ৯৫% থেকে ৯৭% আসক্তির প্রকৃয়াঃ  

* ব্যাবহার(USE)

* ভুল ব্যাবহার (MISUSE)

* অপব্যাবহার (ABUSE)

আসক্তির লক্ষনঃ আসক্তির মাঝে ৪টি লক্ষন বা উপসর্গ বিদ্যমান থাকে

* টান ( OBESESSION)

* বাধ্যতামূলক আচারন (COMPULSIVE BEHABOUR)

* অসুস্থ নির্ভরশীলতা ( SICK DEPENDENCY )

* নিয়ন্ত্রনহীনতা (LOSE OF CONTROL)

* টান ( OBESESSION) কোন কিছু পাওয়ার বা গ্রহন করার তীব্র ইচ্ছা বা আকাঙ্খাকে টান ( OBESESSION) বলে। যেমনঃ ক্রিকেট খেলা দেখার উপর টান, ইললিগ্যাল সেক্স এর উপর টান, রাজনীতির উপর টান, মাদকের উপর টান ইত্যাদি

* বাধ্যতামূলক আচারন (COMPULSIVE BEHABOUR) কোন কাজের প্রতি ব্যাক্তির নির্ভরশীলতা যদি এরুপ অর্থ বহন করে যে, কোন নির্দিষ্ট কাজ করলে ভালোলাগে আর না করলে খারাপ লাগে এবং তার ফলাফল ব্যাক্তির জীবনে নেতীবাচক প্রভাব বিস্তার করে, এ ধরনের আচারনকেই বাধ্যতামূলক আচারন (COMPULSIVE BEHABOUR) বলা হয়

* অসুস্থ নির্ভরশীলতা ( SICK DEPENDENCY ) ব্যাক্তি কোন দ্রব্যের উপর এমনভাবে শারীরিক ও মানুসিক ভাবে নির্ভরশীলতা এমন অর্থ বহন করে যে, হয়ে পরে নিদ্দিষ্ট দ্রব্য নির্দিষ্ট সময়ে গ্রহন না করলে ব্যাক্তি শারীরিক ও মানুসিক ভাবে কষ্টের স্বীকার হয় স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে পারে না। আবার গ্রহন করলে সে সাময়িক স্বস্থি পায় নির্ভরশীলতাকেই অসুস্থ নির্ভরশীলতা ( SICK DEPENDENCY )। * নিয়ন্ত্রনহীনতা (LOSE OF CONTROL)   ব্যাক্তি কোন কাজ বা দ্রব্য গ্রহন বন্ধ করতে চায় বা একটি রুটিনে আবদ্ধ করতে চায় কিন্ত সংশ্লিষ্ট দ্রব্য বা কাজের প্রতি প্রচন্ড টানের কারনে সে অটল থাকতে পারে না পুনঃ পূনঃ কাজটি করতে থাকে ব্যাক্তির এই ব্যার্থতাকে নিয়ন্ত্রনহীনতা (LOSE OF CONTROL)।   মাদকাসক্ত তৈরী হবার প্রেক্ষাপটঃ বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে মানুষ মাদকাসক্ত হতে পারে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা একে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেছে।

চলবে ……………………